
শিশু আসিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু কাঁদিয়েছিল গোটা দেশকে। আজ আসিয়ার ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার রায় ঘিরে তাই সবার চোখে ছিল মাগুরার দিকে। শুনানি শেষে মামলার প্রধান আসামি হিট শেখকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। খালাস দেয়া হয় বাকি তিন আসামির। আসিয়ার বোনের স্বামী, তার ভাসুর ও শাশুড়িকে।
মাত্র ১৪ কার্যদিবসেই শেষ হলো শিশু আসিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়। প্রধান আসামি হিট শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সকাল থেকেই চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘিরে মাগুরা জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ ছিল সরগরম। পৌনে ৯টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয় মামলার চার আসামি হিট শেখ, সজীব শেখ, রাতুল শেখ ও জাহেদা বেগমকে।
ঠিক এক ঘণ্টা পর পরই আসে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম রায়। রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, মেডিকেল এভিডেন্স ও সাক্ষীদের জবানবন্দিতে হিট শেখের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তবে খালাস দেয়া হয়েছে অন্য আসামি সজীব শেখ, রাতুল শেখ ও হিট শেখের স্ত্রী জাহেদা বেগমকে।
বিজ্ঞ বিচারিক আদালত জনগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত শিশু আসিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হিট শেখকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ নয়ের দুই ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন। অপরাপর যারা আসামি, পরিবারের যারা সদস্য তাদেরকে খালাস প্রদান করেছেন।
যদিও আদালতের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসিয়ার স্বজন প্রতিবেশীরা। বাকি তিন আসামিকে বিচারের আওতায় আনতে উচ্চ আদালতে আপিলের কথাও জানান তারা।
এই জায়গা থেকে ওরা খালাস দিয়ে দিলো। খালাসটা কি ঠিক হইসে? আগেও ঠিক হয়নি, পরেও ঠিক হয়নি। কারণ ও সজীবও তো দোষী, ওরা তো চারেই দোষী। কারণ ওরা তো হুমকিতে ওরা মুখ আটকায় রাখসে মাইয়াটারে। মাইরাই তো ওরা মুখ আটকায় রাখসে।
আসিয়ার স্বজন (পুরুষ ১): এই মামলার রায় আমরা সঠিক বিচার পাই নাই। এখন হাইকোর্টের কাছে দাবি যে সজীবও তাদের সহযোগিতায় সবার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়, আমরা এই প্রত্যাশা কামনা করি।
আসিয়ার স্বজন/আইনজীবী (পুরুষ ২): আমরা রায়ের কপি পাওয়ার পরে পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে খালাসকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
গত ১৩ এপ্রিল আলোচিত এই মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৩ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার কার্যক্রম। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২৭ এপ্রিল।