
সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টায় আয়োজিত এ জামাতে ইমামতি করেন দরবার শরিফের পীর মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানি।
একই দিনে সকাল সাড়ে ৮টায় সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় আরেকটি জামাত, যেখানে ইমামতি করেন পীর মাওলানা আরিফ চৌধুরী। এছাড়া সকাল থেকে জেলার অন্তত ৩০টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে সমেশপুর ঈদগাহ, উত্তর ও দক্ষিণ সাদ্রা, অলিপুর, বলাখাল, পাঁচানী, দেওয়ানজিকান্দি, মাথাভাঙ্গাসহ একাধিক মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠ।
স্থানীয়রা জানান, সাদ্রা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইসহাক (র.) ১৯২৮ সালে প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ উদযাপনের নিয়ম চালু করেন। তার অনুসারীরা সেই ধারা অনুসরণ করে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা এবং রমজান পালন করে আসছেন। এই রীতি অনুসরণ করে হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তরসহ জেলার অন্তত ৫০টির বেশি গ্রামের মানুষ এবারও সৌদির সঙ্গে একযোগে ঈদ উদযাপন করেছেন।
দেওয়ানকান্দি গ্রামের বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন ডালিম জানান, ‘আমরা চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরিফের অনুসারী। প্রতিবছরই সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ধর্মীয় উৎসব পালন করি।’ সাদ্রা এলাকার সফিক বলেন, ‘শৈশব থেকে দেখে এসেছি, আমরা বিশ্বের যেকোনো স্থানে প্রথম চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে রোজা ও ঈদ পালন করি।’
সাদ্রা দরবার শরিফের পীর মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানি বলেন, ‘আমরা কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী এবং প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক (র.)-এর নিয়ম মেনে চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে ঈদ উদযাপন করি।’ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীতে চাঁদ একটাই। তাই বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে আমরা সেই অনুযায়ী ধর্মীয় আচার পালন করি।’
জেলার পুলিশ সুপার আব্দুর রকিব বলেন, ‘চাঁদপুরে বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।’
ঈদের নামাজ শেষে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পশু কোরবানি দেন মুসল্লিরা।