খুঁজুন
রবিবার, ৮ জুন, ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

চীনের চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি: ‘যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ালেও আর প্রতিক্রিয়া নয়’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৩০ এএম
চীনের চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি: ‘যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ালেও আর প্রতিক্রিয়া নয়’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক হার ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিক্রিয়ায় বেইজিং শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এতে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র রূপ নিয়েছে, যা বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তুলছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কা বাড়াচ্ছে।

শুক্রবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
চীনের এই পাল্টা পদক্ষেপ ট্রাম্পের আগের শুল্ক বৃদ্ধিজনিত অর্থনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে পতন তীব্র হয়, ডলারের মান কমে যায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ড বিক্রিতে তীব্রতা সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে পরিচিত সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়।

জনাস হেন্ডারসনের গ্লোবাল মাল্টি-অ্যাসেট প্রধান অ্যাডাম হেটস বলেন, ‘মন্দার ঝুঁকি এখন অনেক বেশি—যা দুই সপ্তাহ আগেও এতটা ছিল না।’

বৃহস্পতিবার মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট নতুন করে সৃষ্ট বাজার অস্থিরতা উপেক্ষা করে বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার মধ্য দিয়ে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে। রপ্তানির ক্ষেত্রে চীনা পণ্যের কৃত্রিম রুট হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে ভিয়েতনাম।

এদিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা যুক্তরাষ্ট্রে একটি বাণিজ্য মিশন পাঠাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ট্রাম্প এই সপ্তাহের শুরুতে কিছু দেশের ওপর শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করলেও, চীনের ওপর শুল্ক বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। তার দাবি, চীন পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ায় তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি এখন পর্যন্ত চীনা পণ্যের ওপর মোট ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন।

বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এধরনের পদক্ষেপের জবাবে এটাই তাদের শেষ শুল্ক বৃদ্ধি। চীন আরও জানায়, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক আরও বাড়ায়, তার আর কোনও অর্থ থাকবে না। বরং এটি বিশ্ব অর্থনীতির ইতিহাসে একটি কৌতুক হিসেবে চিহ্নিত হবে।’

তবে চীনা অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি কেবল শুল্কের সংখ্যার খেলায় মেতে থাকে, তাহলে চীন আর সেভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে না।’

এতে বেইজিংয়ের সম্ভাব্য বিকল্প প্রতিক্রিয়া এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের মোকাবিলার সংকল্পও প্রকাশ পায়।

হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি ভালো চুক্তি হতে পারে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘তিনি আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমি বিশ্বাস করি, আমরা একসঙ্গে কাজ করে এমন কিছু করতে পারবো যা উভয় দেশের জন্যই ভালো হবে।’’

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার বেইজিংয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা ‘বুলি’ নীতির বিরোধিতা করা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘বাণিজ্যযুদ্ধে কোনো বিজয়ী নেই।’’

শি আরও জানান, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ইউরোপের ২৭-সদস্য বিশিষ্ট বাণিজ্য ব্লক একসঙ্গে কাজ করলে বৈশ্বিক নিয়মভিত্তিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

জীবনের দর্পণ পরিবারের পক্ষ থেকে- ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক।

ত্যাগের মহিমায় উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
ত্যাগের মহিমায় উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা

সারা দেশে শনিবার উদযাপিত হচ্ছে ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা।

জীবনের দর্পণ পরিবারের পক্ষ থেকে- ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক।

মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি হলো ঈদুল আজহা। যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং ত্যাগের মহিমায় সারা দেশে এবারের ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। বাংলাদেশে এটি কুরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের আদর্শে উদ্ভাসিত করে আসছে।

শনিবার সকালে সারা দেশের মুসল্লিরা নিজ নিজ এলাকার ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন। খতিবরা খুতবায় কুরবানির তাৎপর্য তুলে ধরেন। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা।

 

ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নতমানের বিশেষ খাবারপরিবেশন করা হচ্ছে।

 

ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কুরবানি করছেন। ঈদুল আজহার সঙ্গে পবিত্র হজের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করেছেন।

 

স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী শুক্রবার সৌদি আরবে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়। এদিন সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজিরা মিনায় অবস্থান করে পশু কুরবানিসহ হজের অন্যান্য কার্যাদিসম্পাদন করেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিলিয়ে বিশ্বের বহু দেশে শুক্রবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়।

 

ঈদুল আজহা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে উদযাপন করা হয়। হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কুরবানি করতে গিয়েছিলেন। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এটি ছিল একটি পরীক্ষা। তিনি পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

 

ইসলামে বর্ণিত আছে, কুরবানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে চোখ বাঁধা অবস্থায় তিনিইসমাইল (আ.)-কে জবেহ করেন। কিন্তু চোখ খুলে দেখেন, তার প্রিয় পুত্র ইসমাইলের পরিবর্তে একটি পশু কুরবানি হয়ে গেছে, যেটি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত ছিল।

 

এ ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত হিসেবে কুরবানির বিধান এসেছে ইসলামে। সে অনুযায়ী সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের জন্য পশু কুরবানি করা ওয়াজিব বা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

 

ঈদের পরবর্তী দুদিন অর্থাৎ আগামী সোমবার আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত কুরবানি করা যাবে। কুরবানির পশুর মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ গরিব-মিসকিনদের মধ্যে, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বিতরণ করতে হয় এবং এক ভাগ নিজের জন্য রাখা যায়।

 

এদিকে ঈদুল আজহার ছুটি ৫ জুন থেকে শুরু হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীরা ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি উপভোগ করবেন।

 

এর আগে, গত ৬ মে সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নির্বাহী আদেশে ১১ ও ১২ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ঈদের আগে দুই শনিবার সরকারি অফিস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

 

এবারের ঈদকে ঘিরে যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকার সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ঈদের ছুটিতে দেশের সব সিএনজি স্টেশন ও ফিলিং স্টেশন খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাত্রী হয়রানি বা ভোগান্তির অভিযোগ পেলেই দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

চামড়া কিনতে তৈরি পোস্তা, সংরক্ষণে শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫, ১২:৪০ পিএম
চামড়া কিনতে তৈরি পোস্তা, সংরক্ষণে শঙ্কা

শনিবার (৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা। এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি।

কোরবানির পর এসব পশুর চামড়া সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মহল।

চামড়া সংরক্ষণের লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগেও সারাদেশে ১ লাখ টন লবণ সরবরাহ করা হবে।

 

যার মধ্যে বিনামূল্যে দেওয়া হবে ৩০ হাজার টন। প্রস্তুত রয়েছে পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তার শতাধিক আড়তও।

 

চামড়ার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুটে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ঢাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০–৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫৫–৬০ টাকা।

 

তবুও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা অনেক বড় ব্যবসায়ীকে সরাসরি বিনিয়োগ থেকে বিরত রাখছে। ফলে চামড়া কেনা ও সংরক্ষণের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।

আগের বছরগুলোর তুলনায় চামড়ার প্রবাহও কমেছে পোস্তায়। যেখানে একসময় ঈদের তিনদিনে ৩ লাখ চামড়া সংগ্রহ হতো, সেখানে এখন তা নেমে এসেছে দেড় থেকে ২ লাখে। তবে পুরো মাসজুড়েই চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ চলবে। ঈদের ১৫ দিন পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও চামড়া আসবে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।

 

শুক্রবার (৬ জুন) পোস্তা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ১০০টি আড়ত প্রস্তুত রয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও লবণ মজুদের কাজ শেষ করেছেন আড়তদাররা। ঈদের দিন সকাল থেকেই শুরু হবে চামড়া সংগ্রহ, চলবে তৃতীয় দিন পর্যন্ত। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনবেন তারা।

 

চামড়া ছাড়ানোর ৪ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ না করলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সময়মতো সংরক্ষণে নজর দিচ্ছেন আড়তদাররা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ভালো ব্যবসার আশা করছেন তারা। তবে বৃষ্টিপাত ও অতিরিক্ত গরমে চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে।

 

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব টিপু সুলতান বলেন, পোস্তার আড়তদাররা প্রস্তুত। পর্যাপ্ত লবণ মজুদ রয়েছে। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে অনেক বড় ব্যবসায়ী চামড়া কিনবে না, অনেকেই আত্মগোপনে আছেন। ব্যাংকগুলো ঋণ সীমিত করে দিয়েছে, ফলে বাজারে তারল্য সংকট দেখা দিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সরকার চামড়ার দাম গড়ে ৫–৭ টাকা বাড়ালেও টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা চামড়ার গুণগত মানের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এ বছর পোস্তায় প্রায় দেড় থেকে ২ লাখ চামড়া সংরক্ষণ হতে পারে, যা আগে হতো আড়াই থেকে ৩ লাখ। এতে একটা শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

 

পোস্তার কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী ও সাবেক সভাপতি আফতাব খান বলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। লবণ এবং শ্রমিক ঠিক করে রাখা হয়েছে। এবার ট্যানারি মালিকরা প্রায় ৮০ শতাংশ চামড়া সরাসরি কিনে নিচ্ছেন, পোস্তায় আসছে মাত্র ২০ শতাংশ। ঈদের তিনদিনে পোস্তায় আসে প্রায় ৩ লাখ কাঁচা চামড়া। সব মিলিয়ে ৩০–৩১ লাখ চামড়া সংরক্ষণ করা হয় এখানে।

 

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ জানান, সব ট্যানারি প্রস্তুত রয়েছে। মোকাম ও আড়তে লবণ পৌঁছে গেছে। সরকার ৩০ হাজার মেট্রিক টন লবণ বিনামূল্যে দিয়েছে। তবে কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্তে ট্যানারি মালিকরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন। তবুও আমরা মনে করি, এবছর সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বেচাকেনা গত বছরের চেয়ে ভালো হবে।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চামড়ার পানির দামে বিক্রির সুযোগ থাকছে না। সরকার নির্ধারিত দামের বাইরে কেনাবেচা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মসজিদ-মাদরাসায় লবণ সরবরাহ, সিন্ডিকেট ভাঙতে কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি এবং স্থানীয় সংরক্ষণে জোর দেওয়া হয়েছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিনামূল্যে লবণ, প্রশিক্ষণ, শ্রম ব্যয়ের হিসাব মিলিয়ে এবার যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি চীন ও ভিয়েতনামে রপ্তানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

 

এদিকে এবছর রাজধানীসহ ঢাকায় কোরবানির গরুর চামড়ার মূল্য (লবণ মিশ্রিত) সর্বনিম্ন ১৩৫০ টাকা এবং মফস্বলের গরুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। আর বর্গফুট হিসাবে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০-৬৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫৫-৬০ টাকা।

 

অন্যদিকে ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। যা গত বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা। মূল্য বিশ্লেষণে গত বছরের তুলনায় আসন্ন কোরবানির গরুর চামড়ার মূল্য প্রতি বর্গফুটে পাঁচ টাকা বেড়েছে। এছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়ার ক্রয়মূল্য প্রতি বর্গফুট ২৭ টাকা ও বকরির চামড়ার দাম ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মূল্য গত বছরের তুলনায় দুই টাকা বেড়েছে।

 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি। এর মধ্যে ৫৬ লাখ গরু-মহিষ, ৬৮ লাখ ছাগল-ভেড়া এবং ৫ হাজারের বেশি অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। ২০ লাখের বেশি পশু উদ্বৃত্ত থাকতে পারে।

 

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়, যার ৬০ শতাংশই আসে কোরবানির মৌসুমে। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরু, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগল, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষ এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া।

জুলাই ঘোষণাপত্র-সনদ বাস্তবায়ন হলে এপ্রিলে নির্বাচনে আপত্তি নেই এনসিপির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
জুলাই ঘোষণাপত্র-সনদ বাস্তবায়ন হলে এপ্রিলে নির্বাচনে আপত্তি নেই এনসিপির

জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ প্রতিশ্রুত সময়সীমার মধ্যে বাস্তবায়ন হলে আগামী বছরের এপ্রিল মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তাতে আপত্তি থাকবে না বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা।

 

শুক্রবার (৬ জুন) বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির শীর্ষ নেতারা এ কথা বলেন।

 

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দেন, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে যেকোনো দিন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এনসিপি নেতারা জানান, সংস্কার, জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের বাস্তবায়ন এবং শহীদদের হত্যার দৃশ্যমান বিচার সম্পন্ন হলে এই সময়কে তারা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবেন। তবে তারা অভিযোগ করেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিএনপির হয়ে কাজ করছে, যার ফলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

 

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, নির্বাচনের সময় ঘোষণা আমরা ইতিবাচকভাবে নিয়েছি। প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হয়, তাহলে এপ্রিলের নির্বাচনে এনসিপির কোনো আপত্তি থাকবে না।

 

তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন হবে গণপরিষদের মাধ্যমে। তাই সংস্কার ও সরকার গঠনের ধারাবাহিকতায় নির্বাচনের ঘোষণা যুগপৎভাবে গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন হিসেবেই দিতে হবে।

 

নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। বর্তমান কমিশন তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।

 

দলটির আরেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, নির্বাচনের সময় নিয়ে আমাদের আপত্তি ছিল না। তবে আমরা বলেছিলাম, সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে তবেই নির্বাচন দিতে হবে। এখন নির্বাচনের তারিখ সামনে এনে সংস্কারের প্রশ্নটি উপেক্ষিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। বর্তমান কমিশন তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।

 

দলটির আরেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, নির্বাচনের সময় নিয়ে আমাদের আপত্তি ছিল না। তবে আমরা বলেছিলাম, সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে তবেই নির্বাচন দিতে হবে। এখন নির্বাচনের তারিখ সামনে এনে সংস্কারের প্রশ্নটি উপেক্ষিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে নির্বাচন কীভাবে হবে, সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। অথচ আমরা শুরু থেকেই গণপরিষদ নির্বাচনের বিষয়টি তুলে আসছি।

 

নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন পক্ষপাতদুষ্টভাবে কাজ করছে। এটি বিএনপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফলে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।