‘গণহত্যার বিচার ও আ.লীগ নিষিদ্ধে প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও’

জুলাই গণহত্যা আন্দোলনের সময় ( দৈনিক জীবনের দর্পণ)
দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই আগস্টে গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
শুক্রবার জুলাই আগস্টে গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
গণঅধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে নগরীর বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে চকবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল-পূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আবু হানিফ বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ গণহত্যা চালিয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের নিষিদ্ধের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।আমরা সরকারের কাছে বারবার আহ্বান করছি, গণহত্যার বিচার কাজে গতি আনা ও গণহত্যাকারী দলকে নিষিদ্ধ করতে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচার না করলে প্রয়োজনে যমুনা (প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়) ঘেরাও করা হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর দেশে গুম খুন হত্যা চালিয়েছিল। সবশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ও ক্ষমতায় থাকতে পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছিল।ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। বাস্তবতা হলো আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখন মৃত। আওয়ামী লীগ তাদের প্রিয় দেশ ভারত থেকে গুজব ছড়াচ্ছে। দেশে থাকা পলাতক লীগরা জঙ্গি স্টাইলে বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল করছে।এই আওয়ামী লীগ এখন গুজবলীগ ও জঙ্গিলীগে পরিণত হয়েছে।
আবু হানিফ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৩ বছরে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে, নেতার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু রাজনীতির গুণগত মান পরিবর্তন হয়নি।জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন করার সুযোগ দিয়েছে। তাই এমনভাবে সংস্কার করতে হবে, যাতে করে ফ্যাসিবাদ ফেরার সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, গণঅধিকার পরিষদ এই দেশের মানুষকে নিয়ে ইতিবাচক রাজনীতি করবে।দেশের প্রকৃত মালিকানা জনগণের হাতে তুলে দিতে আমরা কাজ করে যাব।তাই দেশবাসীকে আহ্বান জানাব, আপনারা গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে থাকুন।
দলের আরেক উচ্চতর পরিষদ সদস্য জসিম উদ্দিন আকাশ বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পরে শহিদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকারের দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।তাদের প্রধান দায়িত্ব ছিল খুনি সংগঠন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু তারা ৮ মাসের মধ্যেও সেটা করেনি। এটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার। আর সরকারে তিনজন উপদেষ্টা ছাত্রদের পক্ষ থেকে ছিল এবং তাদের প্রধান দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা। কিন্তু তারা সেটা করেনি। উল্টো ভেতরে ভেতরে ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসন করতেছে! এই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। এমনকি যারা তাদের পুনর্বাসন করবে তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের আন্দোলন চলবে। জুলাইয়ে পরাজিত শক্তির এই বাংলায় রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম মহানগর গণঅধিকার পরিষদের নেতা ইউসুফ। এছাড়াও বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান হোসেন,, গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় পার্বত্যবিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় সহ-নারীবিষয়ক সম্পাদক নাসরিন আক্তার, চট্টগ্রামের গণঅধিকার পরিষদের নেতা ডা. এমদাদুল হাসান, মো. শাহ্ আলম, হাসান তারেক, পেশাজীবী নেতা জাহাঙ্গীর আলম, যুব অধিকার পরিষদের নেতা আবু কাউসার, শাহেদুল ইসলাম, দিদারুল ইসলাম, চট্টগ্রামের ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা হাবিবুল্লাহ মিসবাহ, মো. হাবিব, ওসমান গণি, মো. রিয়াজ, মো. রায়হান, মো. আরাফ, শ্রমিক নেতা সেলিম প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন
Array